আন্তর্জাতিক

বিমসটেকের সাইডলাইনে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের চেষ্টায় মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, উদন্ত টিভি

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং আগামী সপ্তাহে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে থাইল্যান্ডে যাবেন। এই সম্মেলনের সাইডলাইনে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে চান। এজন্য নেপিডো কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান থাইল্যান্ডে আঞ্চলিক নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। ক্ষমতা দখলের পর এটি দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার কোনো দেশে তার বিরল সফর। মিন অং হ্লাইংয়ের ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের উত্থাপিত শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতেও নিষেধ করা হয়েছে।

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড উভয়েই আসিয়ানের সদস্য। এই প্রেক্ষাপটে বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে মিন অং হ্লাইংয়ের থাইল্যান্ড সফর বড় কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন। বিশেষত, যখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশ তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে চাইছে।

মিয়ানমার সরকারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মিন অং হ্লাইং ব্যাংককে আগামী ৩ থেকে ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় বিমসটেক জোটের বেশির ভাগ দক্ষিণ এশীয় দেশের নেতাদের সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল বিভিন্ন দেশের নেতা ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছে। যেসব সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহামদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অন্যতম।

মিয়ানমারের একজন কর্মকর্তার কথা উল্লেখ করে একটি সূত্র জানায়, তারা বৈঠকের জন্য যোগাযোগ করছেন।

ভারতের সরকারি একটি সূত্র জানায়, মিয়ানমারের কর্মকর্তারা জান্তা প্রধান এবং মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য নয়াদিল্লির কাছে ‘প্রস্তাব’ দিয়েছেন, তবে ভারত এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবিষয়ে কোনো মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। মিয়ানমারের সামরিক সরকারের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেনি রয়টার্স।

এই প্রেক্ষাপটে, মিয়ানমারের এই জেনারেল বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন কি না- রয়টার্সের এমন প্রশ্নের জবাবে থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিমসটেক সদস্যভুক্ত সকল দেশের নেতারা তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে মিয়ানমার সংকটের মধ্যে রয়েছে। এই অভ্যুত্থানের ফলে দেশব্যাপী বিক্ষোভ শুরু হয়, যা জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির জনসংখ্যার এক–তৃতীয়াংশের বেশি মানুষের মানবিক সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে শুক্রবারের ভয়াবহ ভূমিকম্প দেশটিতে নতুন সংকট তৈরি করেছে।

মিন অং হ্লাইংয়ের বিদেশ সফর খুবই কম, বেশির ভাগই রাশিয়ায়। চলতি মাসে তিনি রাশিয়া সফর করেন এবং গত বছরের শেষের দিকে একটি উপ–আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দিতে চীন গিয়েছিলেন।

 

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button