সারাদেশ

ফেব্রুয়ারি ছাড়া কেউ আমাদের খবর নেয় না: ভাষা সৈনিক আব্দুল খালেক

১৯৫২ সালের ভাষা সৈনিক আবদুল খালেক ভাসানী রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিতে আন্দোলন করেছেন। মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে পৃথিবীতে যেসব আন্দোলন সংঘটিত হয়েছে, তার মধ্যে বাঙালির ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন শ্রেষ্ঠতম। এ কারণে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মর্যাদায় দিবস হিসেবে পালিত হয়।

লালমনিরহাট জেলা সদরের হাড়িভাঙ্গা (হলদিটারী) গ্রামের গর্বিত সন্তান ৫২’ র ভাষা সৈনিক আব্দুল কাদের ভাসানী ছিলেন মহান ভাষা আন্দোলনের এক সাহসী সৈনিক। ১৬ পৌষ ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে জন্মগ্রহণ করা এই সংগ্রামী ব্যক্তি ছিলেন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মাওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তাঁর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কারণে সবাই তাঁকে আব্দুল খালেক কাদের ভাসানী নামেই ডাকতো।

বয়সের ভারে বার্ধক্যের কাছে আত্মসমর্পণ করা আব্দুল খালেক ভাসানীর শরীরটা ততটা ভালো যাচ্ছে না। একা একা চলতে পারেনা। কিছুদিন আগে চলতে চলতে নিজেই পড়ে গিয়ে মাথা বেশ আঘাত পেয়েছেন, তবে এখন মোটামুটি সুস্থ আছেন।

আব্দুল কাদের ভাসানী ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ভাষার জন্য লড়াই ছিল আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, যেখানে অনেকেই জীবন উৎসর্গ করেছেন। তবে দুঃখের বিষয়, তাঁর অনেক সহযোদ্ধা আজ মানবেতর জীবনযাপন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি আসলেই ভাষা সৈনিকদের খোঁজ করে সবাই, তাছাড়া কেউ খোঁজ রাখেনা।

তিনি আরও বলেন, ভাষা সৈনিকদের আত্মসম্মান আছে, তাই আমরা সবাই শিক্ষিত। তাই কারো কাছে কিছু চাইতে চাই না। সরকারই নির্ধারণ করবে আমাদের জন্য কি করবে। আমার নিজের অর্থনৈতিক কোন সমস্যা নেই। আমার সন্তানরা প্রতিষ্ঠিত। তবে আমার সাথের অনেক ভাষা সৈনিকরা অত্যন্ত মানবেতর সাথে জীবন যাপন করেছে। সরকার ভাষা সৈনিকদের জন্য কিছুই করেনি। ভাষা সৈনিক আব্দুল কাদের ভাসানীর ৪ সন্তান। দুই ছেলে দুই মেয়ে। এবং তার স্ত্রী ও বেঁচে আছেন। ৯৬ বছর বয়স হলেও এখনো তার চলাফেরা স্বাভাবিক। সকলের কাছে তিনি দোআ চেয়েছেন।

আব্দুল কাদের ভাসানী ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন এবং নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস জানার ও ভাষার প্রতি ভালোবাসা রাখার আহ্বান জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button