ছবিমুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্রের দাবি

সমাবেশে পর্দানশিন নারীরা বলেন, ‘শুধু পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশিন নারীরা বৈষম্যের শিকার।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নারীরা বলেন, গত ১৬ বছর যাবৎ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সাবেক কতিপয় স্বৈরাচারী কর্মকর্তা শুধু মুখচ্ছবি না তোলার অজুহাতে পর্দানশিন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছে। এতে পর্দানশিন নারীরা মৌলিক ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে নিদারুণ কষ্টে পতিত হয়েছেন। অনেক পর্দানশিন নারী অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন, কিন্তু এনআইডি ছাড়া ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করতে পারছেন না।
পর্দানশিন নারীরা বলেন, শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। মুখচ্ছবির অজুহাত দিয়ে পর্দানশিন নারীদের এই অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। “পর্দানশিন নারীরা বেপর্দা হলে শিক্ষা পাবে, নয়ত পাবে না”- এমন অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। যেমন- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার হলে পরিচয় যাচাইয়ের জন্য চেহারা ও ছবি মেলানো মত সেকেলে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
তারা বলেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। গত ১৬ বছর শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে নারীদের সাথে যে বৈষম্য হয়েছে, আমরা এ বৈষম্যের পরিসমাপ্তি চাই।
এসময় তারা বেশ কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেন, দাবিগুলো হলো-
১. বিগত ১৬ বছর যে সমস্ত সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানশিন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
২. পর্দানশিন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসীর অধিকার অক্ষুন্ন রেখে অবিলম্বে এনআইডি ও শিক্ষা অধিকার প্রদান করা। সকল ক্ষেত্রে পরিচয় সনাক্তে চেহারা ও ছবি মেলানোর সেকেলে পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩. পর্দানশিন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়ায় সময় পুরুষ নয়, নারী সহকারী বাধ্যতামূলক রাখতে হবে। সমাবেশ শেষে পর্দানশিন নারীরা জেলা নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা অফিসারকে স্মারকলিপি প্রদান করে। সমাবেশে প্রায় ৫ শতাধিক পর্দানশিন নারী উপস্থিত ছিলেন।