সারাদেশ

ভাগনে-ভাগনিকে হত্যার দায়ে মামার মৃত্যুদণ্ড

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ভাগনে-ভাগনিকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মামা বাদল মিয়াকে (৩০) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত দায়রা ও জেলা জজ ২য় আদালতের বিচারক আব্দুল হান্নান এই রায় প্রদান করেছে। এ সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাদল মিয়া কুমিল্লার হোমনা উপজেলার খোদে-দাউদপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, বাহরাইন প্রবাসী বাদল মিয়া ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে ফিরে আসেন। গ্রামে গোষ্ঠীগত দাঙ্গার একটি মামলায় আসামি হওয়ার কারণে বাঞ্ছারামপুরের ছলিমাবাদ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে তার বোন হাসিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেন। প্রবাসে থাকাকালে দোকান করার জন্য ভগ্নিপতি কামাল উদ্দিনের কাছ থেকে ১৩ লাখ টাকা ধার নেন বাদল। এর মধ্যে বাদল তিন লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি ১০ লাখ টাকার জন্য কামালের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল ভগ্নিপতি ও বোনের। এর জেরে বাদলকে থাপ্পড় মারেন ভগ্নিপতি কামাল। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ওই বছরের ২৪ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে কামালের ছেলে কামরুল তার মামা বাদলের রুমে যায়। বাদল তখন রুমে উচ্চস্বরে গান বাজাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কামরুলের হাত-পা বেঁধে গলা কেটে তাকে হত্যা করে বাদল। পরে মরদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখের। ভাগনি শিফা রুম ঝাড়ু দিতে গিয়ে দেখে ফেললে তাকেও মারার জন্য ধ্বস্তাধস্তি করে বাদল। একপর্যায়ে শিফাকে ধাক্কা দিয়ে বাথরুমে নিয়ে তাকেও গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ অন্য একটি রুমের খাটের নিচে রাখেন। এরই মাঝে ঘাতক বাদল সেখান থেকে পালিয়ে যান।

পরে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর বাদল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ ঘটনায় নিহতদের বাবা কামাল হোসেন বাদী হয়ে বাদলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও অতিরিক্ত পিপি দ্বীন ইসলাম বলেন, ৩০২ ধারায় আসামি বাদলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিচারকের রায়ে আমরা খুশি। তবে আমাদের দাবি অনতিবিলম্বে দ্রুত সাপেক্ষে এই রায় কার্যকর হোক এই প্রত্যাশা করি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী তোফা খায়রুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞ আদালত মামলার পূর্ণাঙ্গ সাক্ষ্য গ্রহণ না করে মামলার রায় দিয়েছেন। তাই রায়ের প্রতি সংক্ষুব্ধ হয়ে উচ্চতর আদালতে আপিল করবো। সেই আপিলে আমরা খালাস পাব বলে আশা রাখি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button