প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক হতে লাগবে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ধরণের পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তিত নিয়মানুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রার্থী বা সহকারী শিক্ষকদের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হবে ১২ বছরের।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এসব নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। প্রজ্ঞাপনে নিয়োগের যোগ্যতা, কোটা, পদোন্নতিসহ নানান ক্ষেত্রে বড় ধরণের পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এর আগের অর্থাৎ, ২০১৯ সালের নিয়োগ বিধিমালায় প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রার্থী বা সহকারী শিক্ষক হিসেবে ৮ বছর চাকরি করার অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হতো।
এদিকে, নতুন বিধিমালার তফসিল-১-এর বিধি-২(গ) অংশে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, প্রধান শিক্ষকের ৮০ শতাংশ পদে পদোন্নতি এবং ২০ শতাংশ পদ পূরণ করা হবে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে। তবে পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলো সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।
পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতার অংশে বলা হয়, সহকারী শিক্ষক বা সহকারী শিক্ষক (সঙ্গীত) বা সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) পদে মৌলিক প্রশিক্ষণ ও চাকরি স্থায়ীকরণসহ কমপক্ষে ১২ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হবে।
অন্যদিকে, সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতায় বলা হয়, কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। শিক্ষাজীবনে কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ অথবা সমমানের জিপিএ অথবা তৃতীয় শ্রেণি অথবা সমমানের সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।
এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালার তফসিল-২ এ বর্ণিত নিয়মে তাকে অবশ্যই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
এদিকে, নতুন জারি করা বিধিমালায় বলা হয়েছে, অবিলম্বে এ বিধিমালা কার্যকর হবে। আর ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ কার্যকর হওয়ার পর আগের বিধিমালা, অর্থাৎ ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯’ রহিত বলে বিবেচিত হবে।
ফলে এ বিধিমালা অনুযায়ী আগামীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি আগস্ট মাসের মধ্যেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকরী শিক্ষকের প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হতে পারে।
এছাড়া দেশের প্রায় ৪০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিপুলসংখ্যক শূন্যপদে শিগগির পদোন্নতি ও সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
হিট প্রকল্প প্রাপ্তিতে সেরা দশে নোবিপ্রবি
উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে গতিশীল করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে পরিচালিত “হায়ার এডুকেশন অ্যাকসেলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (HEAT)” প্রকল্পে দেশের সেরা দশ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)।ইউজিসি’র এই ৫ বছর মেয়াদী (২০২৩-২০২৮) প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সারা দেশ থেকে জমা পড়া ১৪৮১টি উপ-প্রকল্পের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ১৫১টি চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে নোবিপ্রবির ৬টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, যার তত্ত্বাবধানে আছেন ৫টি বিভাগের ৬ জন শিক্ষক। এই সাফল্যের কারণে নোবিপ্রবি দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে।হিট প্রকল্পের আওতায় নোবিপ্রবির ৫টি বিভাগের ৭টি গবেষণা প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। মনোনীত শিক্ষকরা হলেন- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আসাদুন নবী, মৎস্য ও সামুদ্রিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রাকিব-উল-ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ফ ম শহীদ-উদ-দৌলা, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল কাইয়ুম মাসুদ, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাদ্দম হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. গোলাম কিবরিয়া।হিট প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন উপ-প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষক ও গবেষকদের থেকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। মোট ১৪৮১টি উপ-প্রকল্প জমা হয়, যাচাই-বাছাই শেষে ১৫১টি উপ-প্রকল্প চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। হিট প্রকল্প ৫ বছর মেয়াদি (২০২৩-২০২৮) এবং এর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বরাদ্দ পেয়েছেন ৫৫৬.০৪ লাখ টাকা, প্রফেসর ড. আ ফ ম শহীদ-উদ-দৌলা বরাদ্দ পেয়েছেন ৪৪৮.৪০ লাখ টাকা, প্রফেসর ড. আসাদুন নবী বরাদ্দ পেয়েছেন ৪৪৭.৩৩ লাখ টাকা, প্রফেসর ড. আবদুল কাইয়ুম মাসুদ বরাদ্দ পেয়েছেন ৯৯.৮৩ লাখ টাকা, প্রফেসর ড. রাকিব-উল-ইসলাম বরাদ্দ পেয়েছেন ৩৩৩.১৪ লাখ টাকা, মো. সাদ্দম হোসেন (অর্থনীতি) বরাদ্দ পেয়েছেন ৯৯.৭৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে দেশের সেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)।দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বাধিক ২২টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এরপরে রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (১৪টি), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১২টি), বুয়েট (১১টি), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (১১টি), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১১টি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (৯টি), গাজীপুরের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (৭টি) এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (৬টি)।গত বুধবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ইউজিসি সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং উপ-প্রকল্পপ্রাপ্ত পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারগণ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউজিসির মাননীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। নোবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, ‘হিট প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে। এই প্রকল্প দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সম্প্রতি নোবাখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট সাতটি গবেষণা প্রকল্প হিট প্রকল্পের আওতায় অনুমোদন পেয়েছে। এ প্রকল্পে পাঁচটি বিভাগের ছয়জন শিক্ষক সুপারভাইজার হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। এ ধরনের উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ প্রজন্মকে গবেষণামুখী করবে এবং উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে।’উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রিজওয়ানুল হক বলেন, ‘ইউজিসির হিট প্রকল্পে বরাদ্দ পাওয়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। হিট প্রকল্প নিয়ে আলোচনার পর আমরা শিক্ষকদের নানা সমস্যা চিহ্নিত করেছি। এ জন্য কুমিল্লার বার্ডে দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছিল। দেশের ৩জন বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সেই কর্মশালায় আমাদের শিক্ষকদের প্রজেক্ট প্রপোজালে সহায়তা করেছেন। এর ফলে আমাদের শিক্ষকরা প্রায় ২০ কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ পেতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের কয়েকজন শিক্ষক যে বরাদ্দ পেয়েছেন, তার অর্থ থেকে একাডেমিক ভবন–৩-এর দ্বিতীয় তলায় তিনটি আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থের সাশ্রয় করবে। বর্তমানে আমাদের অনেক বিভাগে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। এই প্রকল্পের অর্থায়নের মাধ্যমে আমরা গবেষণায় পিএইচডি শিক্ষার্থীদের আরও বেশি সহায়তা করতে পারব এবং আমাদের পিএইচডি প্রোগ্রামের গুণগত মান অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আরও উন্নত হবে বলে আমি আশাবাদী। আমাদের লক্ষ্য শুধু এই প্রকল্পেই সীমাবদ্ধ নয়। ভবিষ্যতে আরও সরকারি ও বেসরকারি প্রকল্প অর্জনের জন্য আমরা আগামী সপ্তাহ থেকেই নিয়মিত প্রশিক্ষণ সেশন আয়োজন করব। শেষ পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বুটক্যাম্পেরও আয়োজন করা হবে, যাতে শিক্ষকদের প্রকল্প প্রস্তাবনা লেখায় কোনো ধরনের ভুল না থাকে।’প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক প্রকল্পের মধ্য থেকে আমাদের প্রকল্প নির্বাচিত হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে আমার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এবং গর্বের বিষয়। এটি আমাদের কঠোর পরিশ্রম, গবেষণা এবং পরিকল্পনার ফল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে যে অনুদান আমরা পেয়েছি, তা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট গবেষণার জন্য নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের সহায়তা প্রদান করবে। বিশেষভাবে, আমাদের ল্যাব ফ্যাসিলিটিজকে আরও আধুনিক ও উন্নত করা সম্ভব হবে, যা গবেষণা এবং শিক্ষাদানের মান বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও, এই প্রকল্পের সুবিধা সরাসরি মাস্টার্স এবং পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরও পৌঁছাবে, তাদের গবেষণা কার্যক্রম, পরীক্ষামূলক কাজ এবং শিক্ষাগত উন্নয়নের জন্য বিশেষ সুযোগ তৈরি হবে। এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা ও গবেষণা পরিবেশকে আরও শক্তিশালী ও মানসম্পন্ন করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ এইচএ
আন্তর্জাতিক ফেলোশিপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন ববি শিক্ষার্থী নওরীন
সাউথ এশিয়া ইয়াং উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট একাডেমি ফেলোশিপের জন্য মনোনীত হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি। সম্প্রতি তিনি এ মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন।নওরীন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক। ৫ দিনব্যাপী এই ফেলোশিপ আগামী ১৫–১৯ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে অনুষ্ঠিত হবে।চিঠি সূত্রে জানা যায়, তরুণ নারীদের গণতান্ত্রিক সম্পৃক্ততা কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ আয়োজন করছে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স (আইডিইএ)। এতে অর্থায়ন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন।জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘দীর্ঘ ১০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ফ্যাসিস্ট আমলের নানা আন্দোলন ও জেল-জুলুমের অভিজ্ঞতার পর আজ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ আমার জীবনের এক গর্বের ও আবেগময় মুহূর্ত। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নারী নেতৃত্ব হিসেবে দেশকে উপস্থাপন করা শুধু সম্মান নয়, গভীর দায়িত্বও বটে। আমি আশাবাদী, এই অভিজ্ঞতা আমাকে সমৃদ্ধ করবে এবং যুবসমাজ ও নারীর নেতৃত্বকে শক্তিশালী করার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি গড়ে দেবে। আমার প্রয়াস থাকবে যেন এই অংশগ্রহণ বাংলাদেশের তরুণ নারীদের স্বপ্ন ও সক্ষমতা বিশ্বদরবারে তুলে ধরার এক অনন্য পথ হয়ে ওঠে।’উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন জান্নাতুল নওরীন। পরীক্ষা দিয়ে হল থেকে বের হওয়ার পর তাঁকে পিটিয়ে ও কম্পাসের কাঁটা দিয়ে খুঁচিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ওই ঘটনার পর তাঁর ছাত্রত্ব বাতিল হয়। তবে সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে তাঁর ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।এইচএ
নোবিপ্রবিতে ডিগ্রি জটিলতায় প্রশাসনিক ভবনে তালা
দীর্ঘদিনের ডিগ্রি জটিলতার সমাধান না হওয়ায় প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে এর সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায় এক বছর ধরে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ডিগ্রি পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বুয়েটের দুইজন সম্মানিত শিক্ষক এবং এসিসিই বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশ একাডেমিক কাউন্সিলে অনুমোদনের পর ইউজিসিতে পাঠানো হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে গেলেও আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় পুনরায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শুরু করে।জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার ইউজিসিতে নোবিপ্রবি প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এসিসিই বিভাগের তিনজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি অংশ নেন। প্রতিনিধিরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের মতো সমমানের ডিগ্রি প্রদানের দাবি জানান। বৈঠক শেষে প্রশাসন ও ইউজিসি সিদ্ধান্ত নেয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেসব অনুরূপ ডিগ্রি প্রদান করা হয়, তাদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।এ বিষয়ে এসিসিই বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, ‘আমরা আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট, সিলেবাস ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ প্রশাসনের কাছে দিয়েছি। কিন্তু সেগুলো গুরুত্ব পায়নি। এতে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে।’এসিসিই বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বাঁধন বলেন, ‘আমাদের ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি দিতে হবে, যেহেতু আমরা ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির অধীনে পড়ছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের অনার্স ডিগ্রি দিচ্ছে, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি দিচ্ছে না। আমরা মনে করি এটা একটা প্রহসন। এই বৈষম্য দূর করার জন্য আমরা প্রশাসনের নিকট আহ্বান জানিয়েছি। আমরা জানিয়েছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি দিচ্ছে। আমরা যে আদলে ডিগ্রি চাইছি, তা না দিয়ে প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রহসন করছে। তারা আমাদের পাঁচবার আশ্বাস দিয়েছে, শেষবার বলেছে তারা আমাদের ডিগ্রি দেবে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি নিশ্চিতভাবে প্রশাসনের মুখে মধু, অন্তরে বিষ। তাদের দ্বিমুখী আচরণ আমরা মেনে নেব না। আমরা প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়েছি। যদি আমাদের ডিগ্রি না দেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে প্রশাসনিক ভবনে সারাদিন তালা ঝুলিয়ে রাখব। আমাদের এই কার্যক্রম ততদিন চলবে, যতদিন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি দেওয়া না হবে।’সর্বশেষে আগামী রবিবারের মধ্যে ডিগ্রি জটিলতার সমাধান না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধের হুশিয়ারি দিয়েছে উক্ত বিভাগের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।