শিক্ষা

মানুষের মস্তিষ্কের আকার ১০ লক্ষ জিবি, পূর্ণ হতে লাগবে ৩০০ বছর!

মানব মস্তিষ্কের জটিলতা ও ক্ষমতা বরাবরই বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করেছে। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পল রেবারের গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতা কমপক্ষে ১০ লক্ষ গিগাবাইট বা এক মিলিয়ন জিবি। তার গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যদি মস্তিষ্ক একটি সর্বাধুনিক ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডারের মতো স্মৃতি সংরক্ষণ করতে পারত, তবে সেই তথ্য একটানা সম্প্রচার করতে প্রায় ৩০০ বছর সময় লাগত।

মানব মস্তিষ্কের আকার মাত্র ১.৪ কেজি হলেও এতে প্রায় ১০০ বিলিয়ন নিউরন বা স্নায়ুকোষ রয়েছে। প্রতিটি নিউরন হাজারেরও বেশি সংযোগ তৈরি করতে পারে, যার ফলে তৈরি হয় ট্রিলিয়নেরও বেশি সংযোগ। এই সংযোগগুলো মস্তিষ্কের স্মৃতি, চিন্তা, বিচার-বিবেচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

কোরআনের আলোকে বিজ্ঞানীদের গবেষণা আরও চমকপ্রদ তথ্য সামনে এনেছে। প্রায় দেড় হাজার বছর আগেই কোরআনে মানব মস্তিষ্কের গুরুত্ব সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ করে মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোব, যা নৈতিকতা, বিচারবুদ্ধি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য দায়ী, কোরআনে এটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে। আধুনিক নিউরোসায়েন্স প্রমাণ করেছে, ফ্রন্টাল লোব ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যক্তির নৈতিকতা ও বিচারক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।

বিজ্ঞানীরা আরও প্রমাণ করেছেন যে, জনপ্রিয় ধারণার বিপরীতে, মানুষ তার মস্তিষ্কের ১০ শতাংশ নয়, বরং পুরো মস্তিষ্কই ব্যবহার করে। তবে বিভিন্ন কাজের জন্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সক্রিয় থাকে। যেমন, চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনার জন্য ফ্রন্টাল লোব, চলাফেরার জন্য সেরিবেলাম এবং আবেগ প্রকাশের জন্য অ্যামিগডালা ও লিম্বিক সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মানব মস্তিষ্কের আশ্চর্যজনক ক্ষমতা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন, ‘তিনি মানুষকে কলমের দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি মানুষকে শিখিয়েছেন যা সে জানতো না।’ বিজ্ঞানও বলছে, মানুষের মস্তিষ্ক কখনোই থেমে থাকে না; এটি সারাক্ষণ নতুন তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে সক্ষম।

এ কারণে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, মানুষের উচিত তাদের মস্তিষ্কের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা, গবেষণা ও জ্ঞান অর্জনে মনোযোগী হওয়া এবং সৃষ্টিকর্তার নিদর্শন নিয়ে চিন্তাভাবনা করা। জ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব প্রদানকারীদের জন্য কোরআনে বিশেষ মর্যাদা ঘোষণা করা হয়েছে, যা বিজ্ঞান ও আধুনিক গবেষণার আলোকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button